Header Ads

মেজর ডালিম সম্পর্কিত কিছু তথ্যাদি তুলে ধরা হলো

 




মেজর মোহাম্মদ আবদুল জলিল (মেজর ডালিম) ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা, যিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সামরিক অভ্যুত্থানগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার পরিচিতি মূলত এই ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত।


মূল পরিচয় ও পটভূমি:

  • মেজর ডালিম পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশনপ্রাপ্ত হন এবং পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
  • ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সাহসিকতার পরিচয় দেন।

১৯৭৫ সালের অভ্যুত্থানে ভূমিকা:

  • মেজর ডালিম ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন।
  • এই অভ্যুত্থানের পর ডালিমসহ অন্যদের সেনাবাহিনীতে পুরস্কৃত করা হয় এবং তাদের নিরাপত্তা ও বৈদেশিক চাকরি দেওয়া হয়।

পরবর্তী জীবন:

  • ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে আরেকটি অভ্যুত্থান ঘটে, যা সেনাবাহিনীতে বড় ধরনের পুনর্গঠনের সূচনা করে। এতে মেজর ডালিমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে মনে করা হয়।
  • এই অভ্যুত্থানের পর, তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান এবং প্রবাসে বসবাস শুরু করেন।







পটভূমি ও শৈশব

  • মেজর ডালিম পাকিস্তান আমলে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
  • তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হন।







মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
  • মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি অনেকের কাছেই একজন সাহসী যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা

  • ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
  • এই হত্যাকাণ্ডে সেনাবাহিনীর একদল অফিসার জড়িত ছিলেন, যাদের মধ্যে মেজর ডালিম অন্যতম ছিলেন।
  • তাকে এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং হত্যা পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনার বিবরণ:

  • ১৫ আগস্টের সকালে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
  • হত্যাকাণ্ডের পর অভ্যুত্থানকারী দল রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে এবং মেজর ডালিম ও তার সহযোগীরা সামরিক বাহিনীতে প্রভাবশালী পদে অধিষ্ঠিত হন।
  • বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতি হন।





পরবর্তী অভ্যুত্থান এবং প্রবাসজীবন

  • ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর আরেকটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মোশতাক সরকারের পতন ঘটে।
  • এরপর ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে কর্নেল আবু তাহের ও জাসদ সমর্থিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আরও পরিবর্তন আসে।
  • এইসব ঘটনার মধ্যে মেজর ডালিম প্রাথমিকভাবে সক্রিয় থাকলেও, পরে রাজনৈতিক অবস্থার কারণে তাকে বাংলাদেশ ত্যাগ করতে হয়।

প্রবাসজীবন:

  • দেশত্যাগের পর তিনি বিভিন্ন দেশে বসবাস করেন, যার মধ্যে পাকিস্তান, লিবিয়া, এবং পরে ইউরোপ অন্যতম।
  • প্রবাসে থেকেও তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং সামরিক অভ্যুত্থান সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।




আইনগত ব্যবস্থা ও বিচার

  • ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হয়।
  • মেজর ডালিম এবং অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।
  • ১৯৯৮ সালে আদালত বঙ্গবন্ধু হত্যায় তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে।
  • বিচার চলাকালীন, মেজর ডালিম প্রবাসে ছিলেন এবং তার অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন হয়।

বিতর্কিত দিক

  1. ঘটনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন:

    • বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র এবং অভ্যুত্থানে মেজর ডালিমের ভূমিকা ছিল কেন্দ্রীয়।
    • তাকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
  2. রাজনৈতিক প্রভাব:

    • হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা পায়, এবং মেজর ডালিমসহ অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারীরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায়।
  3. ইতিহাসের বিতর্কিত চরিত্র:

    • তার কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতীয়ভাবে তীব্র বিতর্ক রয়েছে।
    • তাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়ের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বর্তমান অবস্থা ও উত্তরাধিকার

  • মেজর ডালিমের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য নেই, তবে তিনি বিদেশে আত্মগোপনে আছেন বলে ধারণা করা হয়।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.